২০০৮-২০১০ সালের এসএসসি পর্যন্ত ম্যাথ কোচিং করতাম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বিজয় স্যার এর কাছে। স্যার কেমন পড়ান, তা ভিকারুননিসার অধিকাংশ ছাত্রী ই জানে। যখন HSC তে ভর্তি হলাম,একের পর এক ম্যাথ শিক্ষক বদল করে যাচ্ছিলাম, কারণ স্যার এর মতো করে তো কেও পড়াতেন না ????
মেডিকেল-এ ভর্তির পর একবার স্যার এর সাথে যোগাযোগ হয়। এরপর যোগাযোগ করতে পারিনি স্যার এর ফোন নম্বর হারিয়ে যাওয়ার কারণে। একদিন সৌভাগ্যক্রমে স্যার কে ফেসবুকে পেয়ে যাই।এতো দিন পরে হাজার হাজার ছাত্রী র মধ্যে আমাকে চিনতে পারবেন কিনা একটু এই ভয় নিয়েই স্যার কে ফোন দেই।
কিন্তু নাম বলার পরেই স্যার ই যখন নিজ থেকে বললেন আমার বাসা মিরপুর ছিল,... আম্মু কেমন আছেন (আম্মু ছুটি পর্যন্ত অপেক্ষা করে নিয়ে আসতো)...HSC তে উঠার পর স্যার এর কাছে গিয়ে কান্না কাটি করে যে অনুরোধ করছিলাম স্যার যেন HSC batch শুরু করেন , সত্যি ই খুবই অবাক হলাম! এমনকি আমি ব্যাসিক সাবজেক্টে MD করতেছি, শুনে এটা ও যখন বললেন "তুমি তো তখন থেকেই ভীরু প্রকৃতির ছিলা????,এ কারণে ক্লিনিক্যাল লাইন এ গেলা না, কিন্তু গেলে ভালো করতা"???? (!),...এই অনুভূতি আসলে বুঝানোর মতো না।
আজকে আমি যতটুকুই পথ পাড়ি দিয়েছি, এর পেছনে স্যার এর অসামান্য অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। স্যার আপনার মতো একজন শিক্ষক পাওয়া সত্যিই সৌভাগ্য, এভাবে ই আমাদের মনে রাখবেন ও দোয়া করবেন।
আমি মহসীনা তাসনীম ইয়োথী, বিজয় স্যারের একজন সবচেয়ে ফাঁকিবাজ স্টুডেন্ট ছিলাম😊সেই ২০১৬ তে ক্লাস এইট থেকে নাইন, টেন, এস এস সি পর্যন্ত আমাদের গণিতের হাতেখড়ি,গণিতের মতো সাবজেক্ট এর উপর থেকে ভয় দূর করা, গণিতে সর্বোচ্চ মার্ক পাওয়া সবই সম্ভব হয়েছিল বিজয় স্যারের গাইডলাইনের জন্যই❤️আজকে আমি একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট ... ছোটবেলা থেকেই আমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও স্যারের একটা কথা আমার সেই স্বপ্নকে আরোও উজ্জীবিত করেছিল। "আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার কিন্তু আমি সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনাই তাতে আমার এখন কোনো আফসোস নাই কারণ আজ আমার হাত ধরেই হাজারটা ডাক্তার তৈরি হচ্ছে। আমার অনেক স্টুডেন্ট আজকে অনেক বড় বড় সফল ডাক্তার।এটাই আমার প্রাপ্তি "- এই কথাটাই আমাকে আমার স্বপ্ন পূরণে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা জাগিয়েছিল। আমাদের অনুপ্রেরণার আরেক নাম বিজয় স্যার❤️আমরা গর্বিত বিজয় স্যারের মতো একজন আদর্শ মানুষকে আমাদের শিক্ষক হিসেবে পেয়ে।স্যারের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা... এইভাবেই আরো হাজার স্টুডেন্টদের স্বপ্ন পূরণ হোক আমাদের সবার প্রিয় বিজয় স্যারের হাত ধরে💕
আমি রাওদাতুল জান্নাত রাইদা। ২০১৬-২০১৯ সালের এসএসসি পর্যন্ত বিজয় স্যারের নিকট গণিত পড়তাম। তিনি সরাক্ষন শুধু অংকই করাতেন না। বরং গণিত বিষয়টি যত্ন সহকারে পড়ানোর পাশাপাশি একজন সফল মানুষ হতে হলে কিভাবে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে, হতাশা থেকে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, কিভাবে দুশ্চিন্তা মুক্ত থেকে সফল হওয়ার আত্মবিশ্বাস নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায় এরকম সবকিছুই লালন করতে শিখিয়েছেন বিজয় স্যার। আজকে আমার যে অবস্থান তার জন্য স্যারের অনেক অবদান। স্যারের নিকট আমি কৃতজ্ঞ।
আমি ডা. ইশরাত শাহাব তৃষা, বিজয় স্যার এর স্টুডেন্ট বললে ভুল হবে, বলতে হবে, স্যারের একজন গুণমুগ্ধ! স্যার এর আমি ২০১৩ সালের ক্লাস এইটে থেকে স্টুডেন্ট, নাইন, টেন, এসএসসি এই ক্লাসগুলো তে স্টুডেন্ট তো ছিলামই,আজ যে আমি ডাক্তার, তাও আমি স্যারের ছাত্রী! আমার আজও মনে আছে, সেইসব দিনের কথা। আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়া,কিন্তু এতটা ভয় পেতাম। স্যার গণিত এত ভালো করাতেন, গণিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেতাম। কিন্তু ডাক্তার হতে স্যার কিভাবে ভূমিকা রাখলেন? আমি ছিলাম অনেক ভীতু। অনেক ভয় পেতাম স্বপ্ন দেখতে! স্যার এতটা অনুপ্রেরণা দিতেন, আজও কানে ভাসে, "আমি আজই তোমাকে মেডিকেলে চান্সের টিকিট দিয়ে দিলাম, তুমি আমাকে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্টের দিন মেডিকেল কলেজর সামনে গিয়ে ফোন দিবা, স্যার আমি চান্স পেয়েছি!" সেই যে স্বপ্ন দেখা, তার ফল আপনাদের মাঝে এই সফল আমি।
স্যার এর সবসময় সর্বাঙ্গীন কল্যাণ কামনা করি। এমন অনেক স্বপ্ন স্যারের মাধ্যমে প্রজ্জ্বলিত হোক, স্যার এর অনুপ্রেরণায় রচিত হোক নতুন নতুন সব সাফল্য।জয়তু বিজয় স্যার।